ডিপ্রেশন কি?
ডিপ্রেশন কি?
বর্তমান সময়ে যে সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ডিপ্রেশন। অবাক হই যখন কারো মন খারাপ হলেই যে মনে করে সে ডিপ্রেশনে ভুগছে।আর অন্যতম সমস্যা হলো বেশি ভাগ ডিপ্রেশন হলো নিজে থেকে ডেকে না।অনেকেই হয়ত সিমপ্যাথি বা অন্য কোন কারণে এমন ভাব ধরে সে ডিপ্রেশনে আছে।সে জানে না ডিপ্রেশনের অভিনয় করতে করতে একটা সময় সত্যি সত্যি ডিপ্রেশনে চলে যায়।
আচ্ছা মূল প্রসঙ্গে ফেরা যাক।
ডিপ্রেশন কি? What is depression?
= ডিপ্রেশন বলতে সাধারণত বুঝায় মানুষিক অবসাদ। মানুষ যখন নিজেকে অসহায়, আশাহীন, মূল্যহীন ভাবে নিজেকে আবিষ্কার করে তখন সেই অবস্থাকেই ডিপ্রেশন বলা হয়।
ডিপ্রেশনের কিছু লক্ষণ... কিভাবে বুঝবেন আপনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন?
আমরা যারা সত্যিকার অর্থে ডিপ্রেশনে ভুগছি তারা বেশি ভাগ সময় বুঝতে পারি না যে আমরা ডিপ্রশনে ভুগছি।কিছু কিছু সিনড্রোম আছে যা আপনি আপনার মাঝে অনুভব করলে বুঝতে পারেন যে আপনি মানুষিক অবসাদে ভুগছেন।এর মধ্যে যে লক্ষ্য গুলো বেশি দেখা যায় তা জেনে নেয়া যাক,
১। সব সময় নিজেকে মন মরা করে রাখা।ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও কারণ ছাড়াই মন খারাপ হয়ে যাওয়া।
২। নিজেকে মূল্যহীন বা অপরাধী ভাবা।
৩।স্থির না থাকা,কোন কিছু বার বার মনে করার চেষ্টা করা (বার বার ভুলে যাওয়া)।
৪। দিনের মধ্যে হাজারটা সিদ্ধান্ত নেয়া।কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আবার বার বার পরিবর্তন করা।
৫।বেশি ঘুমানো বা দিন রাত নির্ঘুম কাটানো।
৬।কোন কিছুতেই আনন্দ বা আগ্রহ না পাওয়া।বিরক্ত লাগে সব কিছুতেই।
৭।আপনার জীবনের সব কিছু শেষ বলে মনে হওয়া।
৮।নিজের মৃত্যু বা আত্মহত্যা সম্পর্কে চিন্তা করা।
৯।অতিরিক্ত ক্ষুধা বা ক্ষুধামন্দা।
১০।সব কিছুই শূণ্য বলে মনে হওয়া।
যদিও এই লক্ষণ গুলো খুবই সাধারণ। এই সব লক্ষণের দুই একটা সাধারণত সুস্থ মানুষের ও থাকতে পারে।তাই বলে সে ডিপ্রেশনে ভুগছে বলে ধরে নেয়া যাবে না।কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি এই সব লক্ষণের কয়েকটা লক্ষণ টানা দুই সপ্তাহ বা তার বেশি দিন ধরে নিজের মাঝে দেখতে পান তবে ধরে নিতে হবে আপনি ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছেন।
*ডিপ্রেশনে কি বাহ্যিক কোন লক্ষণ দেখা যায়?
উত্তর : হ্যাঁ ডিপ্রেশনে কিছু কিছু লক্ষণ দেখা যায়।অনেকের হাঁটা চলার গতি দ্রুত হয়ে যায় বা খুবই ধীর হয়ে যায়।নিজেকে কারণে অকারণে আঘাত করতে ভালোবাসে। নিজেকে আঘাত করার মধ্যে শান্তি খুঁজে পায়। কারো সাথে কথা বলতে না চাওয়া,অনেক সময় লোক দেখানো অতিরিক্ত বিনয়ী দেখানো নিজেকে।নিজেকে এমন ভাবে অন্যের সামনে শো অফ করা যা সে নয়।
*শৈশবে কি ডিপ্রেশন আছে?
উত্তর : খুবই কম।বেশি ভাগ ক্ষেত্রে শৈশবের ডিপ্রেশন গুলো আসে পরিবার থেকে।মা- বাবার মাঝে ঝামেলার প্রভাব সন্তানের উপর পরে।(তাই এই ব্যাপারে মা-বাবার সতর্ক থাকা উচিত।সংসার জীবনে ঝামেলা হবেই।এর প্রভাব যাতে সন্তানের উপর না পড়ে সে দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।)বিশেষ করে শিশুরা কোন কিছুই তেমন ভাবে গ্রহণ করে না।কিন্তু কোন কিছু একবার মনের মধ্যে ঢুকে গেলে তা সহজে বের করা সম্ভব না।(ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।)
*টিনেজার বয়সে ডিপ্রেশন...
=এই বয়সের মানুষ গুলো বেশি ভাগ ডিপ্রেশনে ভুক্তভোগী। ২০১৮ সালের একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে যে টিনেজার বয়সে ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষের সংখ্যা শতকরা ৬৭%। যেখানে শিশু মাত্র ০.৭%।
আর এই বয়সে যে কোন ছোট খাটো ব্যাপার গুলো আমাদের কাছে খুব বড় বলে মনে।টিনেজারদের আরেকটা সমস্যা হলো ইগো প্রবলেম।যাই হোক এই নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
আর এই বয়সে যে কোন ছোট খাটো ব্যাপার গুলো আমাদের কাছে খুব বড় বলে মনে।টিনেজারদের আরেকটা সমস্যা হলো ইগো প্রবলেম।যাই হোক এই নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
ডিপ্রশনের প্রকারভেদ। অনেক প্রকার ডিপ্রেশন আছে।এর মধ্যে উল্লেখ্য কয়েকটা তুলে ধরা হলো:
১)major depressive disorder : দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মানুষিক অবসাদে ভুগলে তাকে মেজর ডিপ্রেশন বলা হয়ে থাকে।
২)Persistent Depressive Disorder: দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে কেউ মানুষিক অবসাদে ভুগলে তাকে প্রিসিসটেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিসওর্ডার বলে।
৩)Bipolar or Maniac Disorder:
অল্প তেই মেজাজ ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে তাকে বিপোলার ডিসওর্ডার বলে।নিয়মিত মেডিটেশনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
অল্প তেই মেজাজ ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে তাকে বিপোলার ডিসওর্ডার বলে।নিয়মিত মেডিটেশনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
৪)Seasonal Affective Disorder : এই সমস্যাটা বেশি ভাগ শীত কালে দেখা যায়।যখন দিন ছোট আর রাত বড় হতে থাকে।আর ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এই সমস্যায় ভোগে বেশি।বিশেষ করে মেয়ের ঋতুস্রাব এর সময় তাদের মেজাজ স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি ক্ষিপ্ত থাকে। অল্পেতেই রেগে যায়।
কুহেলিকা কানন।
কোন মন্তব্য নেই