বাচ্চা মেয়েটি
বাচ্চা মেয়েটি
![Image result for cute baby](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhmUTZYToZL58jf1JBtX5p-4CS3x9GC1ekLWdn0PADfpWVF53-HTCsCvfeMLg-u6xg7z3YiVoTgnqqmIIST2fd_WV2NxCxiKW3sSCnBkYkJ6TNsG9Zq5Vq564zLS4FtKATNbDOpMT0n6Oxm/s320/Cute-Baby-Wallpapers+139116.jpg)
-- হ্যালো,,,
-- কিরে কোথায় তুই?
-- অফিসে। তোকে রাতে ফোন করেছিলাম, কিন্তু ফোন বন্ধ পেলাম।
-- রাত কয়টায়?
-- রাত চারটা হবে!
এত রাতের কথা শুনে অমিত বেশ চমকে গেলো। আয়ান তো ঘুম পাগল ছেলে। নিশ্চয় কোনো সমস্যা হয়েছে, তা না হলে এতো রাতে ফোন দেবার মানুষ সে না।
-- কী হয়েছে বলতো? এত রাতে কেন ফোন দিলি? কোনো সমস্যা?
আয়ান কিছু বলতে যেয়েও বললো না। কারণ দেয়ালেরও কান থাকে কিনা। তাই যা করার নিজের করতে হবে।
-- তেমন কিছু না। ঘুম আসছিলো না তাই ফোন করেছিলাম।
-- ঘুম আসবে কী করে। কত করে বললাম একটা বিয়ে করে ঘরে বউ নিয়ে আস। বউ ছাড়া ঘুম আসে নাকি! তুই তো চিরকুমার হয়ে থাকবি। এটাই তোর ইচ্ছা।
আয়ানের এখন মসকারা করার মনমানসিকতা নেই। সে এখন সমুদ্রের মাঝে একটা ছোট কাঠের টুকরায় ভাসছে। তার চারপাশে বিশাল বিশাল ঢেউ নিয়ে পানি বয়ে চলছে। এখান থেকে বেচে তাকে পাড়ে ফিরে আসতে হবে।
-- আচ্ছা বন্ধু পরে কথা হবে। এখন রাখছি।
কলটা কেটে দিয়ে ফোনটা রেখে দিলো। অফিস থেকে রাতে বাসায় ফিরলো। বাসায় আসার সময় বাহির থেকে রাতের খাবার কিনে নিয়ে আসলো। রাতে ঘুম ভালো না হবার কারণে, এবং সারাদিন চিন্তা করার কারণে তার শরীর বড্ড ক্লান্ত লাগছে। ওয়াশ রুমে যেয়ে, প্রায় আঁধা ঘন্টা ধরে গোসল করলো। ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে খাবার নিয়ে বসলো। সকালে এবং দুপুরবেলা না খাওয়ার জন্য এখন অনেক ক্ষুদা লেগেছে। খাবার বেরে নিয়ে মাত্র এক লোকমা মুখে নিলো, আর তখনই গতকাল রাতের কথাটা খুব বিশ্রী ভাবে মনে পড়ে গেলো। সাথে সাথে বমি করে দিলো। খাবার রেখে উঠে চলে আসলো শোবার রুমে। যেয়ে সরাসরি আলমারিটার কাছে গেলো। একি আলমারি খোলা! দ্রুত আলমারির পাল্লাটা খুুলে ফেললো। বাচ্চা মেয়েটি ভিতরে নেই! শুধু রক্তমাখা চাদরটা পড়ে আছে। আয়ান দুই হাত দিয়ে নিজের মথাটা ধরে ফ্লরে বসে পড়লো। যাবার আগে প্রতিটা রুম লক করে দিয়েছিলো। এমনকি যখন বাসায় আসে তখন সে নিজে প্রতিটা রুমের লক খোলে। তাহলে মৃত বাচ্চা মেয়েটি কোথায়! রুমে তো কেউ আসার বিন্দু মাত্র উপায় নেই। তাহলে কি বাচ্চা মেয়েটি জীবিত ছিলো! না না এটা তো কখনো সম্ভব না! আর যদি তাই হবে, তাহলে বাহির থেকে আলমারিটা কে খুললো! আয়ানের মাথা কাজ করছে না। আলমারিটা লাগিয়ে দিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলো। অনেক বমি হচ্ছে তার। বমির সাথে খাণ্ডা খাণ্ডা রক্ত পড়তে খেয়াল করলো। তার সাথে এগুলো কী ঘটছে, কিছুই বুঝতে পারছে না। অবশ্য বাচ্চা মেয়েটিকে এসে না পাওয়াতে একটা উপকার হয়েছে। আর তা হলো, কোথাও লুকিয়ে রাখার ঝামেলাটা তার উপর থেকে সরে গেলো। বিছানায় যেয়ে ক্লান্তিকর শরীরটা এলিয়ে দিলো। কিছুক্ষণ পরেই ঘুুমিয়ে গেলো।
হঠাৎ একটা বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। আয়ান লাফিয়ে উঠলো। সাথে সাথে উঠে বসলো। আজ রাতে রুমের লাইট অন রেখেই ঘুমিয়েছিলো। আবার ফ্লোরের দিকে তাঁকাতেই সেই একই ভাবে পড়ে থাকা বাচ্চা মেয়েটিকে দেখলো। এবার আর কোনো ভয় তার ভিতর কাজ করছে না। এখন শুধু বেশ অবাক হলো, সাথে সাথে জেদ উঠে গেলো তার। আলমারিটা খুলে সেই চাদরটা বের করে নিলো। এবং বাচ্চা মেয়েটিকে চাদরে পেঁচিয়ে নিলো। সোজা ছাদে চলে গেলো। এই আপদবিপদ তার রুমে আর রাখতে চায় না। ছাদে রাখলে কেউ টের পাবে না এটা কে রেখেছে। এত রাতে নিশ্চয় এখন কেউ জেগে নেই। ছাদের দক্ষিণ পাশের কিণারায় কিছু ফুলের টপ রাখা। সেখানে বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ। একেক ফুলের একেক ঘ্রাণ। রাতে এমন ফুলের ঘ্রাণে নেশা ধরে যাবার মতো। ফুলের টপ গুলো সরিয়ে দিয়ে, বাচ্চা মেয়েটির লাশটা রেলিং ঘেষে রাখলো। পরে ফুলের টপ গুলো তার পাশে সাজিয়ে দিলো। তাতে বাচ্চা মেয়েটির লাশ সহজে কারোর চোখে পড়বে না। ফিরে আসার সময় হঠাৎ একটা ঠাণ্ডা বাতাস এসে আয়ানের শরীরে লাগে। তার শরীরের প্রতিটা লোম দাঁড়িয়ে গেলো। কিছু না ভেবে সোজা হাটা দিলো। ছাদ থেকে নামতে যাবে, ঠিক তখনই পিছন থেকে খুব কচি নরম কণ্ঠে কে যেন বললো, "বাবা আমাকে এই অন্ধকারে একা রেখে যাচ্ছো!"
আয়ান ধমকে দাঁড়িয়ে গেলো। "বাবা" শব্দটা তাকে বেশ অবাক হতে বাধ্য করলো। ধীরে ধীরে পিছনে ঘুরে দাঁড়ায়,,,,
MD Imran Hossen Emon
কোন মন্তব্য নেই